Recents in Beach

শিশুর শ্বাসনালিতে হঠাৎ কিছু আটকে গেলে সাথে সাথে যা করবেন


ছোট শিশুদের সবকিছু মুখে দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে। একটু অসাবধান হলেই  মুখে দেওয়া এই বস্তু শ্বাসনালীতে আটকে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের দুর্ঘটনা যত দ্রুত শনাক্ত করা যায় ততই মঙ্গল। হঠাৎ যদি কোনো বাচ্চার কাশি শুরু হয় বা বিষম খেতে শুরু করে এবং যদি এমন হয় যে ঠিক তার আগেই বাচ্চা ছোট কোনো বস্তু নিয়ে খেলছিল তবে বুঝতে হবে গলায় কিছু আটকে গেছে। এ ক্ষেত্রে বাচ্চার মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা বের হতে পারে। কাশি থাকলেও জ্বর, সর্দি থাকবে না। সন্দেহ হলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে হবে।

তৎক্ষণাৎ করণীয়: শ্বাসনালিতে কিছু ঢুকে গেলে শিশুর মুখ খুলে যদি জিনিসটি দেখতে পান, সাবধানতার সাথে বের করে ফেলুন। তবে, দেখা না গেলে খোঁচাখুঁচি করবেন না। এতে আটকে যাওয়া জিনিসটি আরও ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। বাচ্চা যদি কাশতে থাকে তবে তাকে কাশতে দিন। এতে কাশির সঙ্গে আটকে যাওয়া জিনিসটি বের হয়ে আসতে পারে। যদি শ্বাসকষ্ট হয় তবে, শিশুর পিঠ চাপড়ে দিন। বাচ্চার বয়স এক বছরের কম হলে আপনি টুল বা চেয়ারের ‍ওপর বসে শিশুকে আপনার কোলের ওপর আড়াআড়ি ভাবে উপুর করে শুইয়ে, মাথা ঝুলিয়ে দিন।

এরপর শিশুর পিঠের মাঝখানের একটু ওপরের দিকে আপনার হাতের তালুর নিচের অংস দিয়ে জোরে জোরে পাঁচবার চাপড় দিন। চাপড় অবশ্যই সহনীয় পর্যায়ে দিতে হবে। কাজ না হলে আবার করতে পারেন। বয়স বেশি হলে শিশুর পেছনে হাঁটু মুড়ে বা সোজা হয়ে দাঁড়ান। শিশুর বগলের নিচ দিয়ে দুই হাত ঢুকিয়ে জাপটে ধরার ভঙ্গিতে শিশুর পেটের ওপরের অংশ বরাবর আপনার হাত রাখুন।

এরপর এক হাত মুষ্টিবদ্ধ করে, শিশুর বুকের সামনে চওড়া হাড়ের নিচে, যেখানে দুই পাশের পাঁজরের শেষের হাড়টি মিলিত হয়েছে সে জায়গায় রাখুন। এবার অন্য হাত দিয়ে এই হাতটির কবজি চেপে ধরুন। দুই হাত দিয়ে ওপর এবং ভেতর দিক বরাবর শিশুর পেটে জোরে চাপ দিন। অবশ্যই সহনীয় পর্যায়ে চাপ দিবেন। পরপর পাঁচবার চাপ দিন। এতে যদি কাজ না হয় কিংবা শিশুর যদি জ্ঞান না থাকে সে ক্ষেত্রে কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকুন।

মুখ থেকে মুখে বা নাকে শ্বাস দিন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ছোট পুঁতি, মার্বেল, বোতান, ফলের বিচি, ছোট পার্টসযুক্ত খেলনা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিৎ। শিশুদের খেলনা বা জামা কেনার সময়ও পুঁতি, ঘন্টিওয়ালা না কেনাই ভালো।

সূত্র: ডা. আবু সাঈদ, শিশু বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ।

Post a Comment

0 Comments