Recents in Beach

হোম কোয়ারেন্টাইন কি এবং সেখানে কিভাবে থাকবেন?


করোনা ভাইরাস: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। বিদেশ ফেরতদের থেকে দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। তাই আইইডিসিআর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বারবার বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছে।

হোম কোয়ান্টাইন: হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে দেশের বেশিরভাগ মানুষ ই অবগত নয়। কারও কারও ধারণা “হোম কোয়ারেন্টাইন” মানে ঘরের ভেতরে থাকলেই হয়। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিকে কিভাবে থাকতে হবে বা রাখতে হবে সে ব্যাপারে আমরা সাধারণ মানুষ বা গ্রামের মানুষ কিছুেই জানি না। আসুন তাহলে জেনে নেই এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কি কি পরামর্শ মানতে বলেছে।

হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় যা যা করতে হবে:
১) বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাধা থাকুন। সম্ভব না েহলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ফুট) দুরে থাকুন, ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা বা রোম ব্যবহার করুন।

২) আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাধা ঘরে থাকুন এবং অন্য সদস্যদের থেকে আলাধা থাকুন।

৩) সম্ভব হলে আলাধা গোসলখানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ওই স্থান গুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করুন।

৪) বুকের দুধ খাওয়ান এমন মা তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। তবে, মিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।

৫) আপনার সঙ্গে কোনো পশু-পাখি রাখবেন না।

৬) বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে একই ঘরে অবস্থান করলে, বিশেষ করে এক মিটারের মধ্যে আসার সময় মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ।

৭) প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।

৮) মাস্ক পরে থাকা-কালীন এটি হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন। মাস্ক ব্যবহারের সময় প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কামি, বমি ইত্যাদি) সংস্পর্শে আসলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।

৯) টিস্যু পেপার ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিনে ফেলুন।

১০) ব্যক্তিগত ব্যবহার সামগ্রী অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগী করে ব্যবহার করবেন না।

১১) আপনার খাওয়ার বাসন-পত্র , থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারও সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। এসব জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

১২) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার কোয়ারেন্টাইন শেষ হবে। চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মতে একজন হতে অন্যজনের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা আলাধা হতে পারে। তবে, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন। কোয়ারেন্টাইন কালে সকলের সাথে ফোন, মোবাইল ও ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন। এতে সমস্যা হবে না।

১৩) শিশুকে তার জন্য প্রযোজ্য ভাবে বোঝান। তাদের পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিন এবং খেলনা গুলো খেলার পর জীবাণু মুক্ত করুন।

১৪) আপনার দৈনন্দিন রুটিন, যেমন: খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলুন।

১৫) সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করুন।

১৬) বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা উপযুক্ত নিয়মগুলোর সাথে পরিপন্থী নয় এমন যেকোনো বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন।

১৭) পরিবারের সদস্য যারা সুস্থ আছেন এবং যাদের দীর্ঘমেয়াদী রোগসমূহ (যেমন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা প্রভৃতি) নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারেন। তিনি ঐ ঘরে বা পাশের ঘরে থাকবেন, অবস্থান বদল করবেন না। কোয়ারেন্টাইনে আছেন এমন ব্যক্তির সাথে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দিবেন না।

১৮) পরিচর্যাকারী খালি হাতে ওই ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বাতাস ঘরে ঢূকলে, খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাবা আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, গ্লাভস পরার আগে ও খোলার পরে, যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হবে তখন ই প্রতিবার দুই হাত পরিষ্কার করুন।

১৯) কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত বা তার পরিচর্যার ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা ঐ রুমে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন। এসব আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন। ঘরের ফ্লোর, আসবাবপত্রের সকল পৃষ্ঠতল, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের জন্য ১ লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম (২ টেবিল চামচ পরিমাণ) ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করুন। ঐ দ্রবণ দিয়ে উক্ত সকল স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করুন। তৈরিকৃত দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।

২০) কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিকে নিজের কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহৃত কাপড় গুঁড়া সাবান বা কাপড় কাচা সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে বলুন এবং ভালোভাবে শুকিয়ে ফেলুন।

২১) নোংরা কাপড় একটি লন্ড্রি ব্যাগে আলাধা রাখুন। মল-মূত্র বা নোংরা লাগা কাপড় ঝাঁকাবেন না এবং নিজের শরীর বা কাপড়ে যেন না লাগে তা খেয়াল করুন।

২২) কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ দেখা দিলে (১০০ ফারেনহাইট, ৩৮ সেলসিয়াস এর বেশ, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি) অতি দ্রুত আইইডিসিআর এর হটলাইন নম্বরে অবশ্যই যোগাযোগ করুন এবং পরবর্তী করণীয় জেনে নিন।

আইইডিসিআর এর হটলাইনের নাম্বার:
+8801550064901
+8801550064902
+8801550064903
+8801550064904
+8801550064905
+8801401184551
+8801401184554
+8801401184555
+8801401184556
+8801401184559
+8801401184560
+8801401184563
+8801401184568
+8801927711785
+8801937000011
+8801937110011

বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বের করোনা ভইরাসের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করতে পারেন: https://www.coronalivebd.com এই সাইটে।

Post a Comment

0 Comments