Recents in Beach

দাঁতের হলদে ছোপ দূর করতে জেনে নিন ১০টি ঘরোয়া উপায়


ঝকঝকে সাদা দাঁত ও ঝলমলে হাসি কার না ভালো লাগে। কিন্তু! অনেকেই সেটি করে উঠতে পারেন না। হাসতে গিয়ে লুকিয়ে নিতে হয় দাঁত। কারণ! হাসির ফাঁকে বেরিয়ে পর হলদেটে দাঁত। তবে কারো কারো দাঁতের মূল রং ই হলদেটে হয়। আবার কারো দাঁত নানান কারণে হলুদ হয়ে যায়। তার মধ্যে রয়েছে কিছু খাবারের প্রভাব, আবার কিছু কিছু অভ্যাসও দাঁত হলুদ করে দেয়। তবে নানান করণে যেমন দাঁত হলুদ হয়ে যায় তেমন নানান ঘরোয়া উপয়ে হলুদ হয়ে যাওয়া দাঁত সাদাও করা যায়।

এই ঘরোয়া উপায়ে যে উপকরণ গুলি লাগে সেগুলি প্রত্যেক বাড়িতেই কম-বেশি থাকে। সেগুলি ব্যবহারের পদ্ধতিও বেশ সহজ। দাঁত সাদা করার এই পদ্ধতিগুলির সাহায্যে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করা হয়। সেই সঙ্গে দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্যের ও উন্নতি ঘটানো হয়। আসুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক হলুদ দাঁত সাদা করার ঘরোয়া উপায় গুলো:

পাতি লেবুর খোসা: পাতিলেবু সব বাড়িতেই কম-বেশি খাওয়ার কাজে ব্যবহার হয়। ফলে বাড়িতে থাকেই। সেই পাতিলেবুর খোসা এক মুঠো নিয়ে দুই-তিন দিন রোদে দিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর মিক্সিতে দিয়ে ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। সেটি িএকটি পরিষ্কার ঢাকনাওয়ালা পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। এবার তার থেকে দুই চামচ গুঁড়ো নিযে নিতে হবে। সেই গুঁড়োতে এক চামচ গরম জল ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার এই পেস্ট দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। সপ্তাহে কমপক্ষে দুই-তিন দিন এটি দিয়ে দাঁত মাজুন।  এতে পাতিলেবুর খোসার গুণাগুণ দাঁতের যত্ন নেবে। এর মধ্যে থাকা ব্লিচিং প্রপার্টিস দাঁতের হলদে দাগ তুলে দেবে।

অ্যাপেল সিডার ভিনিগার: অ্যাপেল সিডার ভিনিগারে রয়েছে প্রচুর উপকারী উপাদান। এই উপাদান গুলি দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুদের মেরে ফেলে খুব দ্রুত। সেই সঙ্গে হলদে ভাবও তাড়াতাড়ি দূর করে দেয়। সপ্তাহে খুব বেশি নয়, দুই দিন অ্যাপেল সিডার ভিনিগার ব্যবহার করা যাবে। এই অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে জল মিশিয়ে তা দিয়ে কুলকুচি করতে হবে। তার জন্য এক চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার নিতে হবে। তার সঙ্গে তিন চামচের মতো জল মেশাতে হবে। এই ভাবে তৈরী হবে মাউথ ওয়াশ। এই মাউথ ওয়াশ ব্যবহারের পর অবশ্যই ঠান্ডা জল দিয়ে কিছুক্ষণ কুলকচি করতে হবে।

বেকিং সোডা: বেকিং সোডাও সকলের ঘরেই মোটামুটি থাকেই। সেই বেকিং সোডাও দাঁত সাদা করতে কাজে লাগে। এক চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে দুই চামচ জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করতে হবে। সেই পেস্ট ব্রাশে করে নিয়ে দাঁত মাজতে হবে। এই পদ্ধতিতে নিয়মিত ব্রাশ করলে দাঁতের হলদেটে ভাব দুর হবেই। সঙ্গে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলিও আর থাকবে না। ফলে দাঁতের অন্যান্য রোগও হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।

নারকেল তৈল দিয়ে কুলকুচি করতে হবে: নারকেল তৈলে থাকে একটি বিশেষ ধরনের অ্যাসিড। সেই বিশেষ ধরনের অ্যাসিডটি মুখের ভেতরে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে। ফলে প্ল্যাকের মতো সমস্যা দূর হয়। ফলে দাঁত সুন্দর থাকে। নারকেল ব্যাবহারের পদ্ধতি হলো কোনো কিছু না মিশিয়ে। সরাসরি, দুই চামচ নারকেল তেল মুখে নিয়ে কুলকুটি করতে হবে টানা পাঁচ মিনিট। নিয়মিত করলে অবশ্যই ফল মিলবে।

তিল: তিল ব্যবহারের পদ্ধতি হলো, চার চামচ তিল ভালো করে বেটে পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে। সেই পেস্ট দিয়ে সপ্তাহে অন্তত চার দিন দাঁঁত মাজলে দাঁতের হলদে ভাব দূর হবে। সেই সঙ্গে উন্নতিও হবে এনামেলের গঠনে। ফলে দাঁত হলদে দেখার আশঙ্কা থাকবে না।

এছাড়াও অল্প তিলের তৈল মুখে নিয়ে কুলকুটি করলেও উপকার পাওয়া যায়।

নিমের দাঁতন: দাঁতের যত্নের অন্যতম সু-পরিচিত নাম হলো নিমের দাঁতন। বহু প্রাচীন কাল থেকেই এই নিমের দাঁতন ব্যবহার হয়ে আসছে। নিমের ডালে রয়েছে, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তার গুলে ক্যাভিটির মতো সমস্যা তো দূরে যায়, সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়ে যায়। অবশ্যই দূর হয় দাঁতের হলদে ভাবও। তাছাও মাড়ির যে কোনো রকম সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। আবার নিমের ডাল শুকিয়ে নিয়ে পাউডার বানিয়ে নিয়ে সেই পাউডারও দাছত মাজার কাজে নিয়মিত ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতেও উপকার একই মেলে।

কলার খোসা: দাঁতের যত্নে অন্য তম উপকারী উপাদান হলো কলার খোসা। একটা কলার খোসা নিতে হবে। তার ভেতরের সাদা অংশটা দুই মিনিটি দাঁতে ঘষতে হবে। মোটামুটি ভাবে এক থেকে দুই সপ্তাহ এ ভাবে দাঁতের যত্ন নিলে হলদে ভাব দূর হয়ে যাবে। তবে একটি বিষয় হলো খোসাটি ছাড়ানের পর সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবহার করতে হবে। তবেই উপকার পাওয়া যাবে। কিছু দিন ফেলে রেখে খোসার ব্যবহার করলে তা কোনো উপকারে আসবে না। 

মধু: মধুর উপকারিতা অনেক। যা বলে শেষ করা যাবে না। দাঁতের যত্নে মধুর কোনও বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে চার চামচ মধুর সঙ্গে দুই চামচ ভিনিগার মিশিয়ে নিতে হবে। সেই মিশ্রণ দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। নিয়মিত করলে অল্প দিনেই দাঁতের হলদে ভাব দূর হবে। সঙ্গে দাঁতের উপরের অংশের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না।

পুদিনা পাতা: টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত মাজার পরে পুদিনা পাতার ব্যবহার করতে হবে। কয়েকটি পুদিনা পাতা থেঁতো করে তা দাঁতে এবং মাড়িতে ঘষলে মুখের দুর্গন্ধ যেমন দূর হবে তেমনই দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়াও মারা পড়বে। দাঁতের নানান সমস্যা দূরে থাকার পাশাপশি দাঁতের হারিয়ে যাওয়া সাদা ভাবও ফিরে আসবে।

লবঙ্গ এবং নুন: আজকাল অনেক টুথপেস্টেই লবঙ্গ আর নুন থাকার কথা দাবি করা হচ্ছে। তার কারণ হলো দাঁতকে সুস্থ রাখতে এই দু’য়ের কোনো তুলনা হয় না। দাঁতের যত্নে লবঙ্গ তেলের ব্যবহার বহু প্রাচীন কাল থেকেই হয়ে আসছে। তেমনই কাঁচা লবঙ্গও খুবই উপকারী। লবঙ্গের সঙ্গে লাগবে নুন। এই দুই মিলে দাঁতের হলুদ দাগ-ছোপ দূর করে। তার জন্য প্রথমে লবঙ্গ গুঁড়ো করে নিতে হবে। সেই গুঁড়ো থেকে এক চামচ নিয়ে তাতে সম পরিমাণ অর্থাৎ এক চামচ নুন মিশিয়ে নিতে হবে। এবার তা দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। নিয়মিত এই ভাবে দাঁতের যত্ন নিতে হবে। তা হলে দাগমুক্ত ঝকঝকে দাঁত পাওয়া যাবে।

বি:দ্র: এই পোস্ট টি ভালো লাগলে সেয়ার করে সবাইকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments