গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক নারীই আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে চান। তবে, এক্ষেত্রে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে যে, গর্ভাবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে গর্ভের শিশুর কোনো ক্ষতি হয় কি? আরো একটি প্রশ্ন থাকে, ঠিক কতবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা নিরাপদ? আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক এর সঠিক উত্তর গুলো:
ইবনে সিনা হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ জেসমিন আক্তার বলেন, প্রথমেই জেনে রাখা ভালো, আল্ট্রাসনোগ্রাম গর্ভের শিশুর কোনো ধরনের ক্ষতি করে না। অনেকেই মনে করেন, আল্ট্রাসনোগ্রাম থেকে কোনো তেজস্ক্রিয় রশ্মি শিশুর ক্ষতি করে। কিন্তু! আসলে এটা এক্স-রে নয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম হচ্ছে অতি উচ্চ কম্পন সম্পন্ন শব্দ তরঙ্গ, যা সাধারণ শ্রবণ ক্ষমতার বাইরে।
তিনি বলেন, একজন নারী সঠিকভাবে গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপ পার করছেন কিনা, গর্ভের শিশু সুস্থ আছে কিনা, এই সব কিছুই জানা সম্ভব আল্ট্রাসনোগ্রাম করার মাধ্যমে। এক্ষত্রে যদি গর্ভের শিশু বা মায়ের কোনো বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তাও বোঝা সম্ভব। আর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া যায়।
কতবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা যায় জনতে চাইলে জেসমিন আক্তার বলেন, যেহেতু এর ক্ষতিকারক দিক নেই তাই যতবার এচ্ছা ততবারই করা যায়। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তবে, এই পরীক্ষা কিছুটা ব্যয়বহুল অনেকের জন্য। এছাড়া মা এবং শিশুর সব সিমটম যদি স্বাভাবিক থাকে তবে দুই থেকে তিনবারের বেশি আলট্রাসনোগ্রাম করার প্রয়োজন নেই। এর সম্পর্কে কিছু যানা যাক:
১) সেক্ষেত্রে গর্ভের সময়কাল ও প্রসবের সঠিক সময় বের করার জন্য সন্তান ধারণের ৭ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়।
২) ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার করা হয়। এসময় আল্ট্রাসনোগ্রাম করলে বাচ্চার জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কিনা তা জানা যায়। গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে এটাও জানা যায়।
৩) বাচ্চার ওজন বাড়ছে কিনা জানতে তৃতীয়বার ৩০ থেকে ৩৮ সপ্তাহে আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেয়া হয়। জন্মের সময় বাচ্চার পজিশন সহ অন্য বিষয়গুলো সব ঠিকভাবে আছে কিনা জানা যায়।
৪) হাসপাতালভেদে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে সাদাকালো ৫০০ থেকে ১০০০ এবং কালার করতে ১০০০ থেকে ২৫০০ টাকা খরচ হয়।
৫) গর্ভাবস্থায় একজন নারীর সবসময় পরিবার, কর্মক্ষেত্রসহ সবার সব ধরনের সহযোগিতা, পাশে থাকা, ভালোবাসা ও যত্ন নেয়া প্রয়োজন।
৬) মনে রাখতে হবে, প্রতিটি নারীর জীবনে পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে গর্ভাবস্থার পুরো সময়টা উপভোগ করুন। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
সূত্র: জেসমিন আক্তার, গাইনি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা হাসপাতাল, ঢাকা।
0 Comments