মোবাইল বা স্মার্টফোন কেনার আগে যে বিষয় গুলো অবশ্যই দেখবেন।
আমরা একটি স্মার্টফোন কেনার সময় শুধু তার দাম দেখেই তার ভালো বা খারাপ হওয়াটা না ভেবেই মোবাইল ফোন কিনে ফেলি। যার কানণে অনেক দাম দিয়ে মোবাইল কেনার পরেওমোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে আমাদের ভালো লাগে না।
তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো সেটা নিয়েই। একটা মোবাইল ফোন কেনার সময় যে বিষয় গুলো আমাদের দেখা উচিৎ...
মোবাইলের স্ক্রিন এবং ডিসপ্লে
স্মার্টফোনের স্ক্রিন বা ডিসপ্লে বললে, আমরা খালি তার সাইজ বা ডিসপ্লে কত বড়ো সেটাই দেখি। কিন্তু, স্ক্রিন সাইজ দেখার সাথে সাথে ডিসপ্লে টা HD না Full HD নাকি শুধু WVGAসেটা দেখাটা অনেক জরুরি।
অবশ্যই, মোবাইলের স্ক্রিন সাইজ ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি এর ভেতরে থাকলে ভালো।
তাছাড়া, HD+ বা Full HD ডিসপ্লে থাকা মোবাইলের স্ক্রিনে আপনি ভিডিও দেখে, গেম খেলে বা সাদা চোখে দেখেই অনেক মজা পাবেন। ডিসপ্লের কোয়ালিটি অনেক আকর্ষনীয় হবে।
কিন্তু, HD+ স্ক্রিন না হলে তাতে কোনো কিছু দেখতে তেমন কোনো আকর্ষনীয় হবেনা এবং আপনি মজা পাবেন না।
তাই মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই দেখবেন যেনো মোবাইলের স্ক্রিন টি HD+ বা Full HD হয়।
মোবাইল স্ক্রিনের রেজোলেশন
মোবাইলের ভালো এবং আকর্ষনীয় ডিসপ্লে কোয়ালিটির জন্য Screen Resolution অবশ্যই দেখবেন। খালি, স্ক্রিন সাইজ বড়ো হলেই হবেনা। সাইজের সাথে সাথে তার রেজোলেশন ৭২০* থেকে ১৫২০* হলে ভালো হবে।
এ ছাড়াও, ডিসপ্লে যাতে IPS LCD বা Water Drop Notch ডিসপ্লে থাকলে আপনি স্টাইলিস্ট লোক পাবেন।
Battery Power
এখনকার সময় সবচেয়ে আগেই আমাদের যেই জিনিসটি দেখা জরুরি বলে আমি মনে করি, সেটা হলো মোবাইলের ব্যাটারির MaH. ব্যাটারির MaH যত বেশি হবে আপনার ফোনে তত বেশি চার্জ থাকবে। সোজা কথা, একবার ফোল চার্জ করার পর আপনি আপনার ফোনটি অনেক্ষন চারাতে পারবেন।
কেনার আগে দেখবেন ফোনের ব্যাটারি যেনো ৪০০০ থেকে ৫০০০ MaH হয়। এত অনেক্ষন আপনার ফোনে চার্জ থাকবে।
আর আপনার ফোনের ব্যাটারি যদি ৪০০০ MaH থেকে কম হয়, তখন জলদি ই চার্জ শেষ হয়ে যাবে।
মোবাইলের RAM
আপনি আপনার ফোন কেনার আগে মোবাইলের RAM যত বেশি হবে, আপনার ফোনের কাজের গতি তত বেশি হবে। তাছাড়া আপনার RAM যদি বেশি হয তাহলে আপনার ফোনে গেম খেলেও মজা পাবেন এবং আপনার ফোন কখনো হ্যাং হবে না।
আপনার ফোনের RAM যদি 4GB থেকে 8GB হয় তাহলে আপনার ফোনের গতি থাকবে ভালো। আপনি ফোনটি ব্যাবহার করে মজা পাবেন।
আর ফোনের RAM যদি 4GB এর নিচে হয় তাহরে আপনার ফোনের গতি কম থাকবে এবং ফোন ব্যবহার করে আপনি মজা পাবেন না। আপনার ফোন মাঝে মাঝে হ্যাং ও করতে পারে।
মোবাইলের Processor
RAM এর মতো মোইলের Processor ভালো হলে আপনার ফোন দ্রুত এবং স্মুথ ভাবে কাজ করতে সাহায্য করবে।
মোবাইল ফাস্ট এবং দ্রুত হওয়ার জন্য প্রসেসর ‘octa core' প্রসেসর আটটা হাতের সমান সক্তি দিয়ে কাজ করে। এছাড়াও quad core প্রসেসর ও ভালো। তবে, ‘octa core প্রসেসর টাই সবথেকে বেশি ভালো।
মনে রাখবেন, আপনার বেছে নেওয়া প্রসেসর এর স্প্রিড যেনো ২ GHz থেকে বেশি হয়। তাহলে আপনার ফোন দ্রুত গতিতে কাজ করবে।
মোবাইলের Camera
আপনি যদি ছবি তুলতে পছন্দ করেন তাহলে অবশ্যই চাইবেন যেনো আপনার ছবি গুলো অনেক সুন্দর হওক। আর তার জন্য প্রয়োজন একটি ভালো ক্যামেরার আর আপনার ফোনের ক্যামেরা MP যত বেশি হবে আপনার ছবি তত বেশি সুন্দর এবং এইচডি হবে।
আপনার ফোনের ক্যামেরা যেনো ১৬ MP থেকে ৪৮ MP এর ভিতরে হয় বা এর থেকে বেশি হলে আরো ভালো। যদিও ৪৮ MP এর বেশি মোবাইলের ক্যামেরা এখনো চালু হয়নি। তবে ভবিষ্যতে আসবে।
মোবাইলের Internal Storage
আজকাল আমরা মোবাইল ফোনে অনেক অ্যাপ্স, গান, ছবি রাখি যার কারণে আমাদের স্টোরেজ টা যত বেশি হবে ততই ভালো।
তাই লক্ষ রাখবেন যেনো আপনার ফোনের স্টোরেজ ১৬ GB থেকে ১২৮ GB এর মধ্যে যেনো থাকে। এর থেকে বেশি হলে আরো ভালো।
মোবাইলের Brand
আপনি কোন Brand ফোন টি কিনছেন সেটাও একটা গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। ফোনের Brand যদি ভালো হয় তাহলে আপনার ফোনটির সব যন্ত্রাংস ও ভালো হবে।
আমাদের এখানে সাধারনত ভালো Brand গুলো হলো। যেমন: Samsung, Nokia, Asus, MI, Oppo, Vivo etc. সাধারনত এই Brand এর ফোন গুলো কিনলে আপনি লাভবান হবেন।
মোবাইলের ডিজাইন এবং স্টাইল
আপনি যে ফোনটি কিনবেন, অবশ্যই সেটা দেখতে সুন্দর এবং স্টাইলিস্ট হতে হবে। যাতে ফোনটি দেখলে সবার পছন্দ হয়।
ফোনটি যেনো Slim & Shiny হয়।
মোবাইলের কিছু সাধারণ Features & Functions
আপনি যে ফোনটি কিনবেন তাতে কিছু ফিচার এবং ফাংশন থাকলে ভালো হয়। আর সেগুলো থাকলে আপনার ফোনটি আপনি ব্যবহার করে মজা পাবেন। ফিচার গুলো হলো:
১) Face Unlock নিজের Face (মুখ) দেখিয়ে মোবাইল Unlock করা যাবে।
২) Finger Print Unlock আপনি নিজের আঙুলের ছাপ দিয়ে মোবাইল আনলক করতে পারবেন।
৩) Wifi Hotspot ওয়াই-ফাই হট্সপট দ্বারা আপনারা নিজের মোবাইলের ইন্টারনেট ডাটা অন্য মোবাইলের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।
৪) USB OTG Support ইউএসবি ওটিজি সাপোর্ট থাকা মোবাইল ফোন গুলিতে আপনারা যেকোনো পেনড্রাইভ বা ইউএসবি কানেক্ট করতে পারবেন।
৫) App Clone এই ফিচার ব্যবহার করে আপনারা একি মোবাইলে ওয়াটস এপ বা ইমো একসাথে দুটি ইমো বা একসাথে দুটি ওয়াটস এপ ব্যবহার করতে পারবেন।
৬) Latest Android Version আপনার মোবাইলে যেই OS দেয়া আছে, সেটার যাতে লেটেস্ট ভার্সন দেয়া থাকে।
এগুলি সাধারণ কিছু ফিচারস বা ফাঙ্কশন দেয়া থাকলেই মনে করবেন আপনার বেঁছে নেয়া মোবাইল বা স্মার্টফোনটি লেটেস্ট এবং ভালো।
0 Comments